থানকুনি আমাদের দেশের খুব পরিচিত একটি ভেষজ গুণসম্পন্ন উদ্ভিদ। এর
ল্যাটিন নাম সেন্টালা আকিয়াটিকা। থানকুনি পাতা দেশের সর্বত্র পাওয়া যায়।
রোগ চিকিৎসার অঙ্গনে থানকুনি পাতার অবদান অপরিসীম।
প্রক্রিয়াজাতকরণের
মাধ্যমে বহু রোগের উপশম হয় এর ভেষজ গুণ থেকে। খাদ্য হিসাবে এই পাতা সরাসরি
খেলে রোগ নিরাময়ে যথার্থ ভূমিকা রাখতে পারে। অঞ্চলভেদে থানকুনি পাতাকে
টেয়া, মানকি, তিতুরা, থানকুনি, আদামনি, ঢোলামানি, থুলকুড়ি, মানামানি,
ধূলাবেগুন, আদাগুনগুনি নামে ডাকা হয়।উপকারিতা
জ্বর
থানকুনি পাতার রস ১ চামচ ও শিউলি পাতার রস ১ চামচ মিশিয়ে প্রতি দিন সকা
লে খেলে জ্বর সারে।পেটের পীড়া
অল্প পরিমাণ আমগাছের ছাল, আনারসের কচি পাতা ১টি, কাঁচা হলুদের রস, ৪/৫
টি থানকুনি গাছ শিকড়সহ ভালো করে ধুয়ে একত্রে বেটে রস করে খালি পেটে খেলে
পেটের পীড়া ভালো হয়। ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এটা আরও বেশি কার্যকর।
পাঁচড়া রোধ
কাঁচা হলুদের রস চা চামচের ২ চামচ, থানকুনি পাতার রস ২/৩ চামচ একত্রে মিশিয়ে শরীরে মাখলে পাঁচড়া রোগ ভাল হয়।
গ্যাস্ট্রিক
আধ কেজি দুধে ১ পোয়া মিশ্রি ও আধা পোয়া থানকুনি পাতার রস একত্রে মিশিয়ে প্রতি দিন সকালে ১ সপ্তাহ খেলে গ্যাস্ট্রিক ভালো হয়।
হজমশক্তি বৃদ্ধি
বেগুন/পেঁপের সাথে থানকুনি পাতা মিশিয়ে শুক্তো রান্না করে প্রতি দিন ১ মাস খেলে হজমশক্তি বৃদ্ধি পায়।
রক্ত দূষণ রোধে থানকুনি
প্রতি দিন সকালে খালি পেটে ৪ চা চামচ থানকুনি পাতার রস ও ১ চা চামচ মধু/ মিশিয়ে ৭ দিন খেলে রক্ত দূষণ ভালো হয়।
বাক স্ফুরণে
যে সব বাচচা কথা বলতে দেরি করে অথবা অস্পষ্ট, সে ক্ষেত্রে ১ চামচ করে
থানকুনি পাতার রস গরম করে ঠান্ডা হলে ২০/২৫ ফোঁটা মধু মিশিয়ে ঠান্ডা দুধের
সাথে কিছু দিন খাওয়ালে অসুবিধাটা সেরে যায়।
খুসখুসে কাশি
২ চামচ থানকুনির রস সামান্য চিনিসহ খেলে সঙ্গে সঙ্গে খুসখুসে কাশিতে উপকার পাওয়া যায়। ১ সপ্তাহ খেলে পুরোপুরি ভালো হয়ে যাবে।
আমাশয়
প্রতি দিন সকালে ৫/৭ টি থানকুনি পাতা চিবিয়ে ৭ দিন খেলে আমাশয় ভালো
হয়। অথবা, থানকুনি পাতা বেঁটে পাতার রসের সাথে চিনি মিশিয়ে দু’ চামচ দিনে
দু’ বার খেলে আমাশয় ভালো হয়।
পেট ব্যথা
থানকুনি পাতা বেঁটে গরম ভাতের সাথে খেলে পেট ব্যথা ভাল হয়।লিভারের সমস্যা
প্রতি দিন সকালে থানকুনির রস ১ চামচ, ৫/৬ ফোঁটা হলুদের রস (বাচ্চাদের
লিভারের দোষে) সামান্য চিনি ও মধুসহ ১ মাস খেলে লিভারের সমস্যা ভালো হয়।