মৃগি রোগ হল মস্তিষ্কের রোগ। চিকিৎসা বিজ্ঞানে একে বলা হয় Epilepsy. যারা
দীর্ঘ দিন ধরে মৃগী রোগে ভুগে থাকেন তারা জীবনের একসময় জটিল
মানসিক রোগ সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে। সন্দেহ আর সংশয়ের কারণে রোগী খাবার গ্রহণ
পর্যন্ত বন্ধ করে দিতে পারে। মৃগী রোগীরা যে ধরনের সাইকোসিস সমস্যায়
আক্রান্ত হয় তাকে বলা হয় ক্রনিক প্যারানয়েড হ্যালুসিনেটরি সাইকোসিস।
মৃগী রোগের সাধারণত খিঁচুনি হয় এবং রোগী অজ্ঞান হয়ে যায়৷ মৃগী রোগের একটি বৈশিষ্ট হলো রোগী বার বার আক্রান্ত হয় কিন্তু আক্রান্তের পর পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যায়৷ নিজস্ব কোন পদ্ধতি নেই যে সেই পদ্ধতিতে মৃগী রোগী ভালো হয়। অনেক কুসংস্কার সমাজে দেখা যায় মৃগী রোগীদের চিকিতসার ক্ষেত্রে।
মৃগী রোগের সাধারণত খিঁচুনি হয় এবং রোগী অজ্ঞান হয়ে যায়৷ মৃগী রোগের একটি বৈশিষ্ট হলো রোগী বার বার আক্রান্ত হয় কিন্তু আক্রান্তের পর পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যায়৷ নিজস্ব কোন পদ্ধতি নেই যে সেই পদ্ধতিতে মৃগী রোগী ভালো হয়। অনেক কুসংস্কার সমাজে দেখা যায় মৃগী রোগীদের চিকিতসার ক্ষেত্রে।
মৃগী রোগের কারণ সমূহ:
মৃগী রোগের প্রাথমিক কারণ এখনও অজানা তবে নিম্নলিখিত কিছু কারণে মৃগী রোগ হতে পারে৷
০১. মাথায় কোন আঘাত পেলে
০২. মস্তিস্কের কোন প্রদাহ হলে যেমন-মেনিনজাইটিস
০৩. বাচ্চাদের জটিল ও দেরিতে প্রসব হলে
০৪. মস্তিস্কে টিউমার হলে
মৃগী রোগের ধরন :
সাধারনত ২ ধনের মৃগী রোগ রয়েছে-
১. সাধারন মৃগী (generalized or mixed epilepsy)
ক) বেশী মাত্রার মৃগী রোগ
খ) মৃদু মাত্রার মৃগী রোগ
২. শরীরের কোন নির্দিষ্ট অংশের(focal epilepsy)
বেশি মাত্রার মৃগী রোগের লক্ষণ :
- এই রোগ সাধারণত কয়েক ঘন্টা থেকে কয়েক দিন পর্যন্ত চলতে পারে৷ এসময় রোগীর আচরণে পরিবর্তন আসে৷
- খিঁচুনি হবার পূর্বে রোগী নিজেই বুঝতে পারে৷
- রোগী জ্ঞান হারায় ও মাটিতে পড়ে যায়৷ সবগুলো মাংশ পেশী টান টান হয়ে যায় তখন কান্নার মত চিত্কার করে এবং রোগী নীল বর্ণ হতে পারে৷ সাধারণত আধা মিনিটের মত এ অবস্থা স্থায়ী হয়৷
- ঝাকুনির মত খিঁচুনি শুরু হয়৷ মুখ দিয়ে ফেনা বের হতে পারে৷ রোগী জিহ্বা কামড় দিয়ে রাখতে পারে৷ রোগীর অজান্তেই প্রস্রাব, পায়খানা বেরিয়ে আসতে পারে৷ রোগীর এ অবস্থা প্রায় ৩০ সেকেন্ড স্থায়ী হয়৷
- রোগী মুর্ছিত অবস্থায় থাকে ও আস্তে আস্তে গভীরঘুমে ঘুমিযে যায়৷ রোগী জেগে উঠার পর কিছু সময়ের জন্য সঠিকভাবে চিন্তা করতে পারে না এবং কি ঘটেছে সে ব্যাপারে কিছুই মনে করতে পারে না৷ মাঝে মাঝে মাথা ব্যথা হতে পারে।
মৃদু মাত্রার মৃগী রোগের লক্ষণ :
- হঠাত্ করে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া৷ এটা ১০ থেকে ১৫ সেকেন্ড স্থায়ী থাকে৷
- কিছু রোগী অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে যায়৷ আবার সাথে সাথে জ্ঞান ফিরে দাঁড়িয়ে যায়৷
- কখনও অজ্ঞান হওয়ার সাথে সাথে খিঁচুনি শুরু হয়৷
এটা ভিন্ন ভিন্ন রকমের হতে পারে৷ এখানে জ্ঞান হারানোর সাথে কোনো সম্পর্ক নেই৷রোগী অজ্ঞান হতে পারে আবার নাও হতে পারে৷ এক্ষেত্রে শরীরের নির্দিষ্ট জায়গায় খিঁচুনি হতে হয়। খিঁচুনি এক অঙ্গ থেকে বাড়তে বাড়তে পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে পারে।
মৃগী রোগী অজ্ঞান হয়ে গেলে করণীয় :
- রোগী যাতে অন্য কোনো প্রকার আঘাত না পায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে৷
- রোগীকে বিপদজনক জায়গা যেমন-আগুন, পানি, বিদ্যুৎ, যন্ত্রপাতি ইত্যাদি থেকে সরিয়ে আনতে হবে৷
মাথা সামান্য নিচের দিকে হেলান দিয়ে রাখতে হবে৷ যেন ভালোভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারে ও মুখের ফেনা বা লালা থাকলে তা গড়িয়ে পড়ে যেতে পারে৷ - রোগীকে পর্যাপ্ত ঘুমাতে দিতে হবে৷
- প্রয়োজনে রোগীকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে৷
- যে সব কাজ ঝুকিপূর্ণ সে সকল কাজ মৃগী রোগীদের করা মোটেই উচিত নয়৷ যেমন- রান্না করা, সাতার কাটা, গাড়ী চালানো, সাইকেল বা মোটর সাইকেল চালানো, আগুনের পাশে কাজ করা, যন্ত্রপাতি চালানো, উঁচু কোন জায়গায় কাজ করা ইত্যাদি৷
- যে সমস্ত জিনিস মৃগী রোগের ঝুকি বাড়িয়ে দেয় সেগুলো বাদ দিতে হবে৷
ভিডিও